ঢাকা , রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫ , ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
নতুন বাজেটে বৈষম্য কমবে সব ক্ষেত্রে সংবিধান পুনর্লিখনে গণপরিষদ-আইনসভা নির্বাচন একই হবে ৬০০ পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়ে ডিএসসিসির পরিচ্ছন্নতা অভিযান ফিলিস্তিনিদের দুর্দশাকে ‘যীশু খ্রিস্টের কষ্ট’র সঙ্গে তুলনা কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের সম্পাদকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ,প্রতিবাদে চালকদের মিছিল নরসিংদীতে রাতে স্ত্রীর দিনে স্বামীর লাশ উদ্ধার আইন উপদেষ্টার ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে শিবির নেতার স্ট্যাটাস বেশিরভাগ আওয়ামী লীগের নেতা ঢাকায় আত্মগোপনে দিনাজপুরে ৩১৬ চালকলের লাইসেন্স বাতিল জাতীয় পার্টি কোনো সুবিধাভোগী ও সুবিধাবাদী দল নয় - জিএম কাদের এনসিপি’র জেলা-উপজেলা কমিটির আহ্বায়কের বয়স হবে সর্বনিম্ন ৪০ আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে জনবল নিয়োগ অমানবিক চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলসহ পাঁচ দাবি বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের ভর্তুকি মূল্যে পাটের ব্যাগ দেবে সরকার-পরিবেশ উপদেষ্টা তীব্র সঙ্কটেও দেশে গ্যাসের চুরি ও অপচয় বন্ধ হচ্ছে না গাজায় ইসরায়েলি নির্মম গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ নড়াইলে সৌদি প্রবাসী হত্যা হামলা-ভাঙচুরের পর পুরুষশূন্য গ্রাম প্রেস সচিবের মন্তব্যকে ‘অযাচিত’ বলছে ভারত রাজধানীতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল
ঐকমত্য কমিশন এনসিপি বৈঠক

সংবিধান পুনর্লিখনে গণপরিষদ-আইনসভা নির্বাচন একই হবে

  • আপলোড সময় : ২০-০৪-২০২৫ ১১:১৭:৪৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২০-০৪-২০২৫ ১১:১৭:৪৬ পূর্বাহ্ন
সংবিধান পুনর্লিখনে গণপরিষদ-আইনসভা নির্বাচন একই হবে
* গণতান্ত্রিক সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত বিজয়কে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছে : আলী রীয়াজ * ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬টি বিষয়ের মধ্যে ১২৯টি বিষয়ে একমত এনসিপি * নির্বাচন প্রলম্বিত করার পক্ষপাতী নয় এনসিপি : আখতার হোসেন জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, আমরা এমন একটি নির্বাচন চাচ্ছি যেটা আইনসভা নির্বাচন এবং ঐ নির্বাচনটাকে গণপরিষদের স্ট্যাটাস দেয়া হবে। যেকোনো ধরনের কনস্টিটিউশনাল অ্যামেন্ডমেন্ট হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জের শিকার হতে পারে। পরবর্তী নির্বাচন আইনসভা নির্বাচন এবং গণপরিষদের স্ট্যাটাসটা নেবে। যাদের প্রথম কাজ হবে সংবিধান পুনর্লিখন করা এবং পরবর্তী সময় পার্লামেন্টের স্বাভাবিক কাজ করা। গতকাল শনিবার দুপুর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। এনসিপির দক্ষিণ অঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ’২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান কেন হয়েছে, আগে তা উপলব্ধি করতে হবে। একচ্ছত্র ক্ষমতার বিষয়টি যেন না থাকে তাও উল্লেখ করা হয়। আমাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া যদি আগের মতোই হয়, তাহলে কোনও লাভ নেই। জাতীয় স্বার্থে এসব বিষয় আমাদের ঐকমত্যে পৌঁছতে হবে। তিনি বলেন, অনেকে মনে করেন, আমরা দুটি নির্বাচন চাই। আসলে আমরা একটি নির্বাচনই চাই। যার নাম হবে আইনসভার নির্বাচন। সেটা পরে গণপরিষদের মর্যাদা পাবে। কারণ যেকোনও সংশোধনী পরবর্তী সরকার চ্যালেঞ্জ করতে পারে। যেমন-বিগত সরকারের ১৫তম সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। গণপরিষদের নির্বাচনের মাধ্যমে করা আমাদের এখনকার সংশোধনীগুলো নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারবে না। হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা আজকে জাতীয় কমিশনের সঙ্গে বসেছি। সেখানে আমাদের অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ১৬৬টি সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে আমরা ১২৯টির সঙ্গে একমত হয়েছি। তিনি বলেন, যেসব বিষয়ে একমত হয়েছি, সেসব বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে পর্যবেক্ষণ দিয়েছি। কোথায় সংযোজন-বিয়োজন হবে, সেসব বিষয়েও নোট দিয়েছি। আর যেসব বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি সেগুলোর বিষয়ে আমাদের পর্যবেক্ষণ রয়েছে। মূলত এখন পর্যন্ত আমরা তিনটি বিষয়ে কথা বলেছি। প্রথম বিষয়টি হচ্ছে, প্রোটেকশন অব সিটিজেন বা নাগরিকদের নিরাপত্তা। আমরা দেখেছি স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রের নাগরিকদের নিরঙ্কুশ অধিকার নিশ্চিত হয়নি। সেসব বিষয়ে আমরা বিস্তারিত কথা বলেছি। দ্বিতীয় বিষয় পিসফুল ট্রানজেকশন অব পাওয়ার বা শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর। আমরা দেখেছি যখনই রাষ্ট্রের পাওয়ার ট্রানজেকশনের সময় এসেছে তখনই দেশে গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। একটি নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে আরেকটি নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর কীভাবে হবে। এই বিষয়টি নিয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে। যাতে আমাদের অতীতের যেসব দুঃখ স্মৃতি যেগুলো রয়েছে সেগুলোর পুনরাবৃত্তি আর না হয়। তৃতীয় বিষয়টি হচ্ছে, সংসদ স্থিতিশীলতার নাম করে আর্টিকেল ১৭ দিয়ে কণ্ঠরোধ করে রাখা হয়েছে। সেটি নিয়ে কথা হচ্ছে। যেটির মধ্য দিয়ে আমরা একসঙ্গে সংসদে স্থিতিশীলতা, সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা আমাদের সংসদকে কীভাবে আরও বেশি কার্যকর করা যায় সেটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা তিনটি বিষয় নিয়ে কথা বলেছি সংবিধান পুনর্লিখন, ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া শান্তিপূর্ণ করা এবং নাগরিকের নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দেয়ার বিষয়। তিনি বলেন, আমরা দুটি নয়, একটিই নির্বাচন চাই যেটি আইনসভার নির্বাচন এবং একইসাথে সেই নির্বাচনকে গণপরিষদের স্ট্যাটাস দেয়া হবে। নির্বাচন প্রলম্বিত করার পক্ষপাতী নয় এনসিপি : আগামী ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন প্রলম্বিত করার পক্ষপাতী নয় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এমনটাই বলেছেন দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন। তিনি বলেন, বিচার ও সংস্কারের দৃশ্যমান রোডম্যাপ দিয়েই অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনের দিকে যেতে হবে। তিনি বলেন, বিচার ও সংস্কারের দৃশ্যমান অগ্রগতির জন্য যতটুকু সময় প্রয়োজন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ততটুকু সময় পেতে পারে। কোনোভাবেই এই সরকার কাজ ব্যতীত সময় পেতে পারে না। কাজের ভিত্তিতেই এই সরকার সময় পাবে। তিনি আরও বলেন, এক-এগারোর মতো যে ঘটনা ঘটেছে, এতে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছে। সেজন্য অন্তর্বর্তীকালীন বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার যখন দায়িত্বে আসবে, তাদের মূল কাজ হবে নির্বাচন আয়োজন করা। নির্বাচনকালীন এই ধরনের সরকারের রূপরেখা কী হবে, সেটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আখতার হোসেন বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক সংস্কারের কথা বলেছি। কীভাবে নতুন করে একটি সংবিধান পুনর্লিখন করা যায়, গণপরিষদ নির্বাচনের বাস্তবতা নিয়ে কথা বলেছি। ক্ষমতার ভারসাম্যের কথা বলেছি। বাংলাদেশের যে বিদ্যমান রাজনৈতিক কাঠামো রয়েছে, সেখানে শুধুমাত্র আইন প্রণয়নের ভিত্তিতে নয়, যেন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহাবস্থান ও আস্থার ভিত্তিতে ক্ষমতা হস্তান্তরের গুরুত্বারোপ নিয়ে আলোচনা করেছি। গণতান্ত্রিক সংগ্রামের অর্জিত বিজয়কে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছে : গণতান্ত্রিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত বিজয়কে বিভিন্নভাবে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, এ দেশের ইতিহাসে গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষা বারবার পর্যুদস্ত হয়ে একটি ব্যক্তিতান্ত্রিক শাসনে পরিণত হয়। গণতন্ত্রের সংগ্রামের মাধ্যমে যে বিজয় অর্জিত হয়েছে, বিভিন্নভাবে সে বিজয়কে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা দীর্ঘ ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদ শাসনকে পরাভূত করে বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি উজ্জ্বল অধ্যায় রচনা করতে অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করেছেন দাবি করে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘দীর্ঘদিনের যে ফ্যাসিবাদী শাসন জগদ্দল পাথরের মতো আমাদের বুকের ওপর বসে ছিল, তার বিরুদ্ধে জীবন বাজি রেখে লড়াই-সংগ্রাম এবং আপনাদের সঙ্গীদের প্রাণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সে শাসনকে পরাস্ত করতে পেরেছেন। একটি ফ্যাসিবাদী শাসনকে পলায়ন করতে বাধ্য করেছেন, যা বাংলাদেশকে রাষ্ট্র সংস্কারের দিকে অগ্রসর করেছে। তিনি আরও বলেন, এখন সবাই মিলে নতুন বাংলাদেশ গড়ার সময় এসেছে। ফ্যাসিবাদ যেন আর কখনও এ দেশে ফিরে না আসে, রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেন স্থায়ী রূপ নেয়, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং সব ধরনের নিপীড়ন যেন আমরা প্রতিহত করতে পারি। বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষে ছিলেন, কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। অপরদিকে এনসিপির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আখতার হোসেন, হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিনসহ আরও দুজন। এর আগে ১৭ এপ্রিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির প্রতিনিধি দল।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স